পশ্চিম বলকান রুটে অবিবাসীরা | ছবি: আর্কাইভ/আনসা
পশ্চিম বলকান রুটে অবিবাসীরা | ছবি: আর্কাইভ/আনসা

চলমান শীতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আরেকটি ঢেউ মোকাবিলা করছে জার্মানির শহরগুলো৷ তবে এই স্রোত যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা ইউক্রেনের নাগরিকদের নয়৷ এরা আসছেন পশ্চিম বলকানের দেশগুলো থেকে৷

উদাহরণস্বরূপ, কোলন শহর কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ কর্মকর্তা কাটিয়া রয়টারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শহরটিতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পশ্চিম বলকান থেকে আসা অভিবাসীদের সংখ্যা ১৯৯১ থেকে ২০০১ সালে পর্যন্ত চলা ইয়ুগোস্লাভ যুদ্ধের সময়কেও ছাড়িয়ে গেছে৷

ইউরো নিউজকে তিনি বলেন, ‘‘কোলন শহরে বাস করা পশ্চিম বলকানের নাগরিকদের সংখ্যা এক হাজারের বেশি৷ এর সঠিক সংখ্যা বলা সম্ভব নয়, কারণ প্রতিনিয়তই অভিবাসীদের সংখ্যা ওঠানামা করতে থাকে৷ মোট শরণার্থীর ৪০ শতাংশই ইউক্রেন থেকে এসেছেন, কিন্তু বাকি ৬০ শতাংশ অন্যান্য অঞ্চলের৷ এদের বেশিরভাগই আলবেনিয়ার৷’’

অভিবাসীদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষমতার ১০৭ শতাংশই কাজে লাগিয়েছে শহরটি৷ অর্থাৎ সক্ষমতার চেয়েও বেশি শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে কোলন শহর৷

পশ্চিম বলকান রুট

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তর্ক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্সের তথ্যমতে, ২০২২ সালে ইইউতে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত রুট ছিল পশ্চিম বলকান৷ এই রুটে ২০২২ সালে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬০০ পারাপারের হিসাব দিয়েছে ফ্রন্টেক্স৷ আগের বছরের তুলনায় এ পরিমাণ ১৩৬ শতাংশ বেশি এবং ২০১৫ সালের পর সর্বোচ্চ৷

অন্য নানা দেশের নাগরিক এই রুট ব্যবহার করলেও সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং তুরস্ক থেকে আসা অভিবাসীরা রয়েছেন তালিকার শীর্ষে৷

অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পশ্চিম বলকান সীমান্তে ফ্রন্টেক্সের সদস্য মোতায়েনের৷ বাস্তবে রূপ নিলে এটিই হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে সংস্থাটির প্রথম সদস্য মোতায়েনের ঘটনা৷


নর্থ মেসিডোনিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো এবং সার্বিয়া

বলকানের দেশগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ অভিবাসী আসছেন এই চার দেশ থেকেই৷ এখন পর্যন্ত সংখ্যা সীমিত হলেও কসোভো এবং সার্বিয়ার মধ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে যেকোনো সময় বিপুল অভিবাসীর স্রোত দেখতে পারে জার্মানি৷

নভেম্বরে বেলগ্রেড থেকে নেয়া গাড়ির নাম্বার প্লেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেয় কসোভো৷ এরপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের চলমান উত্তেজনা আরো বাড়তে শুরু করে৷ জাতিসংঘের অনেক সদস্য রাষ্ট্রই কসোভোকে স্বীকৃতি দিলেও রাশিয়া এবং সার্বিয়া কসোভোর স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি৷

আপার বাভারিয়া কিভাবে শরণার্থীদের নানা বিষয় ব্যবস্থাপনা করছে, জানতে চাইলে জনসংযোগ কর্মকর্তা ভুল্ফগাং রুপ বলেছেন, ‘‘ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা এখনই ধারণা করা সম্ভব নয়৷ তবে আমরা আবাসনের ব্যবস্থা বাড়িয়ে চলেছি, যাতে আমাদের এলাকায় আসা প্রতিটি অভিবাসীকে আমরা আশ্রয় দিতে পারি৷’’

এডিকে/এআই (ইউরোনিউজ)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন