উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার আনুষ্ঠানিক আটককেন্দ্রগুলোতে পাঁচ হাজারের মতো অভিবাসীকে আটক করে রাখা হয়েছে৷ আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম বলছে, বাস্তব পরিস্থিতি আরো ভয়ানক৷
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আইওএম এর মহাপরিচালক আন্তোনিও ভিটোরিনো বলেন, "দেশটিতে (লিবিয়া) মানবাধিকারের লংঘনের পরিপ্রেক্ষিতে এমন ঘটনা গ্রহণযোগ্য নয়৷ আমরা বরাবরই এটা স্পষ্ট করেছি, আটকে রাখা কোনো সমাধান নয়৷"
রাষ্ট্রীয় এই আটককেন্দ্রগুলোতে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর সঙ্গে মিলে আইওএম জীবনরক্ষাকারী বিভিন্ন সহায়তা করে৷
কিন্তু আইওএম এর আশঙ্কার জায়গা ভিন্ন৷ ভিটোরিনো বলেন, "আমাদের শঙ্কা, দেশটিতে অনেক অনানুষ্ঠানিক আটককেন্দ্রও রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা ধারণা রাখি না, আমাদের কোনো সংস্থারই যাওয়ার অনুমতিও নেই৷"
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির সরকারের পতনের পর থেকে দেশটিতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ তখন থেকেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসার একটি অন্যতম জনপ্রিয় রুটে পরিণত হয়েছে লিবিয়া৷ প্রতি বছর সাব-সাহারান আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ার নানা দেশের অভিবাসীরা ইউরোপে আসার লক্ষ্য নিয়ে দেশটিতে আসেন৷
অভিবাসীরা যখন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন, তখন কর্তৃপক্ষ তাতে বাধা দেয়৷ কাউকে কাউকে লিবিয়া উপকূলে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় এবং আটককেন্দ্রে আটক করা হয়৷ এইসব কেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ে বরাবরই উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে জাতিসংঘ৷
ভূমধ্যসাগরে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ, অর্থাৎ খোঁজা এবং উদ্ধার কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আহ্বান জানান ভিটোরিনি৷ সমুদ্রে ভাসমান অভিবাসীদের নিরাপদে অবতরণের দিকেও বিশেষ মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি৷
উত্তর আফ্রিকা থেকে সবচেয়ে কাছে অবস্থানের কারণে ইটালি অনেক অভিবাসীর কাছেই সহজ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে৷ কিন্তু জানুয়ারিতে এক নতুন আইন পাশ করেছে ইটালিয়ান সরকার৷ এই আইন অনুসারে উদ্ধারকারী জাহাজগুলো একবারে কেবল একটি উদ্ধার অভিযানই চালাতে পারবে৷
এই আইন নিয়ে কথা বলতে ইটালির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়েছেন আইওএম প্রধান৷ কিন্তু আলোচনার ফল নিয়ে বিস্তারিত কিছু সাংবাদিকদের জানাননি তিনি৷
এডিকে/এআই (ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর)