উন্নত জীবনের খোঁজে নিজ দেশ গিনি ছেড়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ঠিক পৌঁছেছেন ইটালি। আর ইউরোপে পা রাখার দিন না পেরোতেই যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারিয়ামা।
ঠিক আগের দিনটিতেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছিলেন নৌকায়। সেখান থেকে মারিয়ামাকে উদ্ধার করা হয়। পরদিন ৩০ সপ্তাহের এই গর্ভধারিণীকে নিয়ে যাওয়া হয় রেজিও ক্যালাব্রিয়ার গ্রেট মেট্রোপলিটন হাসপাতালে। সেখানেই সি-সেকশনের মধ্য দিয়ে দুই সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
লিবিয়া পৌঁছাতে ছয় দিনে পাড়ি দিলেন মালি মরুভূমি
রোববার ১২টা ২০ মিনিটে পৃথিবীর আলো দেখেন মারিয়ামার দুই সন্তান। দুই সন্তানের একজনের ওজন এক কেজি, অপরজনের ওজন এক কেজি ৩০০ গ্রাম। তাদের হাসপাতালটির নিও-নাটাল ইনটেনসিভ কেয়ারে রাখা হয়েছে। তবে নবজাতকদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তার কিছু নেই বলে নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসকেরা।
মারিয়ামা জানালেন, লিবিয়া পৌঁছাতে ছয়দিন ধরে মালি মরুভূমিতে হেঁটেছেন তিনি। আর লিবিয়া পৌঁছে কোনো দেরি নয়, উপকূল থেকে উঠেছিলেন নৌকায়। সেখানে কেটেছে তিন দিন।
আরো পড়ুন: সন্তানের চিকিৎসার আশায় দেশ ছাড়েন পাক ক্রীড়াবিদ শাহিদা
যদি কোনো কারণে রেজিও ক্যালাব্রিয়ায় তার পৌঁছানো না হতো, তা হলে সমুদ্রের বুকেই হয়তো তার সন্তান জন্ম দিতে হতো। যা নিজের এবং তার সন্তানদের জন্য চরম ঝুঁকির হতো।
তিনি বলেন, “এই দেশে আমাকে যেভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে, আমি সত্যিই অভিভূত। আমি ইটালীয়দের এবং এই দেশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কারণই ভয়ঙ্কর কঠিন মুহূর্তে তারা আমাকে সাহায্য করেছে, উদ্ধার করেছে।”
এত ধকল সামাল দিয়েও ভালো আছেন মারিয়ামা। তার স্বামী অবশ্য আগে থেকেই ইটালিতে থাকেন। রাজধানী রোমে কাজ করেন। স্ত্রী-সন্তানের কথা শুনে রোম থেকে রওনা হয়েছেন তিনি। কারণ এখন স্ত্রীর পাশে থাকতে চান, আর আলিঙ্গন করতে চান তার সন্তানদের।
৫৮৪ জনের মধ্যে অন্তত ৪০ শিশু
যে ৫৮৪ অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের শনাক্ত করার কাজ শেষে ছবি তুলে নিয়েছে পুলিশ। ইটালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে, তাদের অনেককেই দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হয়োদের অবশ্য কিছু সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী রেজিওতে রয়ে গেছেন। একটি স্কুলে আশ্রয় শিবির খুলে তাদের রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন:উদ্ধার জাহাজে সন্তান জন্ম দিলেন এক নারী
রেজিওতে পৌঁছানো অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে অন্তত ৪০ শিশু এবং বেশ কয়েকজন সন্তানসম্ভাবা নারী আছেন। তাদেরই একজন ছিলেন মারিয়ামা। এদের মধ্যে মোট ছয়জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
এছাড়া একটি শিশুকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছেে। কারণ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করে যখন উপূকল রক্ষীদের জাহাজে আনা হয়, সেখান থেকে লাফ দিতে চেয়েছিল শিশুটি।
টিএম/এএমইউ (আনসা)