তুরস্কের উপকূলরক্ষীদের দাবি, গ্রিস সীমান্তে পুশব্যাকের শিকার নৌকাগুলোই ফিরে আসে তাদের উপকূলে। সেখান থেকে বিপদগ্রস্ত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করেন তারা। ফাইল ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স/টার্কিশ কোস্ট গার্ড/আনাদোলু
তুরস্কের উপকূলরক্ষীদের দাবি, গ্রিস সীমান্তে পুশব্যাকের শিকার নৌকাগুলোই ফিরে আসে তাদের উপকূলে। সেখান থেকে বিপদগ্রস্ত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধার করেন তারা। ফাইল ছবি: পিকচার অ্যালায়েন্স/টার্কিশ কোস্ট গার্ড/আনাদোলু

ইটালির দক্ষিণ উপকূলে নৌকাডুবির শোক না কাটতেই, এবার তুরস্কের উপকূলে ডুবে গেছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দুটি নৌকা। এখন পর্যন্ত ৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধারের পাশাপাশি চারটি মরদেহ উদ্ধার করেছে তুরস্কের উপকূলরক্ষীরা।

ইটালির দক্ষিণ উপকূলে নৌকাডুবির শোক না কাটতেই এবার তুরস্কের উপকূলে ডুবে গেছে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দুটি নৌকা। এখন পর্যন্ত ৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধারের পাশাপাশি চারটি মরদেহ উদ্ধার করেছেন তুরস্কের উপকূলরক্ষীরা।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এবং বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী নৌকা দুটি তুরস্কের উপকূলে এসে ডুবে যায়।

আরো পড়ুন: ইটালিতে নৌকাডুবি: স্মৃতিচিহ্ন খুঁজছেন নিহতের স্বজনরা

এ ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়াদের বেশিরভাগ হাইপারথার্মিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

আনাদোলু জানিয়েছে, গ্রিক কর্তৃপক্ষ তাদের জোর করে ফেরত পাঠালে বা পুশব্যাকের পরে নৌকা দুটি তুরস্কের জলসীমায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জোর করে ফেরত পাঠানো ইস্যুতে বরাবরই গ্রিসের বিরুদ্ধে সোচ্চার তুরস্ক। যদিও অভিযোগটি অস্বীকার করে আসছে গ্রিস। তবে অধিকার সংস্থা ও এনজিওগুলো বিভিন্ন সময় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে।

আরো পড়ুন: গ্রিসের কড়া নীতি নৌকাডুবিতে ভূমিকা রাখতে পারে: ইটালির মন্ত্রী

তবে ওই দুটি নৌকায় কতজন আরোহী ছিলেন এবং তারা কোন দেশের নাগরিক ছিলেন, তা এখনও জানা যায়নি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান জারি রেখেছে তুরস্কের উপকূলরক্ষীরা।

এজিয়ানে আরো নৌকাডুবি

সাম্প্রতিক সময়ে এই অঞ্চলে এটি প্রথম নৌকাডুবির ঘটনা নয়। গত শনিবার এজিয়ান সাগরের তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে রাবারের ডিঙ্গি ডুবে সাত অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১১ জনকে। 

আরো পড়ুন: নৌকাডুবি: মৃত পাঁচ অভিবাসীর মরদেহ উদ্ধার তুরস্কের

উদ্ধারের পর তাদের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের বেশিরভাগ ছিলেন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের নাগরিক। আনাদোলু জানিয়েছে, নিখোঁজদের খোঁজে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

২০১৫ এবং ২০১৬ সালের দিকেও তুরস্ক হয়ে হাজারো মানুষ সমুদ্র পাড়ি দিয়ে গ্রিসের দিকে যেতেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে এই সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ১২ মার্চ পর্যন্ত দুই হাজার ৭৬৩ অভিবাসনপ্রত্যাশী গ্রিসে পৌঁছেছেন।

ইটালিমুখী নতুন রুটে তৃতীয় অবস্থানে বাংলাদেশিরা

অভিবাসনপ্রত্যাশীরা এখন তুরস্ক হয়ে গ্রিসের পরিবর্তে ইটালি যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ইটালীয় বার্তা সংস্থা আনসা জানিয়েছে, ২০২২ সালে এই রুটে ইটালিমুখী অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

বছরের শুরু থেকে ১৯ হাজার ৭৪৯ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইতিমধ্যে ইটালি পৌঁছেছে। আর মাল্টায় গেছে মাত্র একজন, স্পেনে গেছে তিন হাজার ৩২৯ জন।

আরো পড়ুন: সন্তানের চিকিৎসার আশায় দেশ ছাড়েন পাক ক্রীড়াবিদ শাহিদা

ভূমধ্যসাগর হয়ে এই পথে যারা ইউরোপে পাড়ি জমাতে চায় তাদের সবচেয়ে বড় অংশটি টিউনিশিয়ার নাগরিক। এ পথের মোট যাত্রীর ২২ দশমিক ২ শতাংশই আসে এই দেশ থেকে।

এর পরেই আছে মিশরীয়দের নাম। মোট যাত্রীর ১৯ দশমিক ৮ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে তারা। এর পরেই অর্থাৎ তৃতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশিরা। এই রুটের মোট যাত্রীর ১৫ দশমিক ১ শতাংশ বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে পাড়ি জমাতে আসেন। তবে গ্রিসে যারা আশ্রয়ের দাবি করেছেন তাদের বেশিরভাগ আফগানিস্তানের নাগরিক।

টিএম/এআই

 

অন্যান্য প্রতিবেদন