গ্রিস সরকারের কড়া অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে এথেন্সে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শরণার্থীরা৷ ফাইল ছবি: ইপিএ/আলেকজান্দ্রোস ভ্লাচস
গ্রিস সরকারের কড়া অভিবাসন নীতির প্রতিবাদে এথেন্সে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শরণার্থীরা৷ ফাইল ছবি: ইপিএ/আলেকজান্দ্রোস ভ্লাচস

অভিবাসন ইস্যুতে গ্রিস কঠোর নীতি গ্রহণের প্রতিবাদে সরব হয়েছে দেশটিতে অবস্থানরত শত শত শরণার্থী৷ এমনকি দেশটির সরকার পুশব্যাক বা জোর করে ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে আশ্রয়প্রার্থীদের ‘হত্যা‘ করেছ বলেও অভিযোগ করেছেন তারা৷

রাজধানী এথেন্সে সংসদ ভবনের সামনে শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন দেশ থেকে এসে গ্রিস আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীরা৷

বিক্ষোভকারীরা তাদের হাতে থাকা ব্যানারে লিখেছেন, ‘‘পুশব্যাক বন্ধ করুন, খুনিদের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করুন৷’’

অপর একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ’’নিরাপরাধের রক্ত ন্যায়বিচারের জন্য আর্তনাদ করে।"

আরো পড়ুন: ইউরোপ থেকে বিতাড়নের শিকার আরো ৬৪ বাংলাদেশি

এজিয়ান সাগরে বিভিন্ন সময় ডুবে যাওয়া অভিবাসী নৌকার দিনক্ষণগুলো তুলে ধরে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে আসেন অনেক৷ কেউ কেউ সমুদ্রে এবং ট্রেন অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মৃত্যুর জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিসকেই দায়ী করেন৷

এসময় বিক্ষোভরত শরণার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে বলেন, "মিতসোটাকিস, তোমার হাতে রক্ত আছে লেগে, মৃত শিশু সমুদ্রে, মৃত শিশু ট্রেনে৷’’

অধিকার সংস্থা, অভিবাসীদের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধির প্রতিবেদন এবং ভুক্তভোগীরা দাবি করে আসলেও পুশব্যাকের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে গ্রিক কর্তৃপক্ষ৷ 

অভিবাসীদের মানবাধিকার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফেলিপ গঞ্জালেজ মোরালেস গত বছর বলেছিলেন, ‘‘গ্রিসে স্থল এবং সমুদ্র সীমান্তে পুশব্যাকের ঘটনাগুলো সাধারণ নীতিতে পরিণত হয়েছে৷’’

আরো পড়ুন: গ্রিসের ক্যাম্পে আগুন: অভিযুক্ত চার আফগানের প্রত্যাশা ‘ন্যায় বিচার’

চার বছর আগে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে, গ্রিসের বর্তমান রক্ষণশীল সরকার অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে তুরস্কের সঙ্গে থাকা নিজেদেল স্থল ও সমুদ্র সীমানা জোরদার করেছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী টাকিস থিওডোরিকাকোস এই সপ্তাহে বলেছেন, কিছুদিনের মধ্য তুরস্ক সীমান্তে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ইস্পাতের বেড়া নির্মাণে একটি চুক্তি সই হবে৷

মার্চের শুরুতে কস দ্বীপের কাছে প্রায় ৩০ জন লোক নিয়ে একটি স্পিডবোট ডুবে গেলে একজন নারী ও একজন পুরুষ মারা যান৷ এটিই ছিল গ্রিসের জলসীমায় সবশেষ ঘটনা৷

এক মাস আগে, লেসবস দ্বীপে একটি পাথুরে উপকূলে ৪১ জন আশ্রয়প্রার্থী নিয়ে আসা একটি ডিঙ্গি ডুবে গেলে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে দুইজন মারা গেছেন৷

আরো পড়ুন: বাংলাদেশি অভিবাসীকে আঘাত, সাজা কমলো গ্রিক নাগরিকের

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, আশ্রয়প্রার্থীদের স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নে তারা জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করছে৷ আর আশ্রয়প্রার্থীদের ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিংবা অন্য কোনোখানে পুনর্বাসেন আগে, আশ্রয়শিবিরে রাখা হবে৷

অনিয়মিত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ঠেকাতে জানুয়ারিতে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেছিলেন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিশর, মরক্কো, তিউনিসিয়া এবং নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে অভিবাসন ইস্যুতে আলোচনা করতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

অভিবাসন মন্ত্রী নোটিস মিতারাচি বলেন, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় গ্রিস গত দুই বছরে ৮ হাজারেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে৷

টিএম/এআই (এএফপি)

 

অন্যান্য প্রতিবেদন