টিউনিশিয়ার উপকূলরক্ষীদের নজরদারি৷ ছবি: নাটালিয়া সেলিভারস্টোভা/ডিপিএ/পিকচার-অ্যালায়েন্স
টিউনিশিয়ার উপকূলরক্ষীদের নজরদারি৷ ছবি: নাটালিয়া সেলিভারস্টোভা/ডিপিএ/পিকচার-অ্যালায়েন্স

নৌকাডুবির ফলে ভূমধ্যসাগরের পথে আফ্রিকার পাঁচজন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে৷ আরো ২৮ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন৷

ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে টিউনিশিয়া থেকে ইটালি যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা ঘটে৷ স্থানীয় একটি অধিকার গোষ্ঠী টিউনিশিয়ান ফোরাম ফর সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক রাইটসের এক কর্মকর্তা ড. রোমাদান বেন ওমর জানিয়েছেন, উপকূলরক্ষীবাহিনী পাঁচ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়৷ টিউনিশিয়ার দক্ষিণের শহর স্ফ্যাক্সের উপকূলের কাছে উল্টে যায় নৌকাটি৷

বিপর্যয়ের পর ওই নৌকায় থাকা অভিবাসীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিপন্ন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি৷ টিউনিশিয়ার কর্তৃপক্ষ যদিও এই নিয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি৷

বিশ্লেষকেরা বলছেন, স্ফ্যাক্সের উপকূলরেখা একটি মূল ‘এক্সিট পয়েন্ট’ হয়ে উঠেছে৷ অর্থনৈতিক সংকট এবং যুদ্ধের কারণে সহিংসতা থেকে বাঁচতে আফ্রিকার অনেক বাসিন্দাই ইউরোপের পথে পাড়ি দেন৷ তবে টিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্টের অভিবাসন বিরোধী বক্তব্যের পর সেখানে অস্থিরতা শুরু হয়েছে ৷ বাধ্য হয়ে অনেক অভিবাসী ফিরেও গিয়েছেন নিজ দেশে৷ কিন্তু এই অস্থিরতার কারণে ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চাপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)

জাতিসংঘের একটি অসমর্থিত সূত্রের তথ্য অনুসারে, এই বছর টিউনিশিয়া থেকে রওনা দিয়ে ইটালি পৌঁছেছেন প্রায় ১২ হাজার অভিবাসী৷ ২০২২ সালে একই সময়সীমায় টিউনিশিয়া থেকে ইটালিতে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৩০০ জন৷ 

ফেব্র্রুয়ারিতে অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলায় ‘‘জরুরি ব্যবস্থা’’ নিতে নির্দেশ দেন টিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ৷ কোনো প্রমাণ ছাড়াই দেশটির জনসংখ্যার রূপরেখা পরিবর্তনে অভিবাসীরা ‘‘অপরাধমূলক চক্রান্ত’’ করছে বলে দাবি করেন তিনি৷ এমনকি উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে সংগঠিত বেশিরভাগ অপরাধের জন্য অভিবাসীদের দায়ী করেন তিনি৷

প্রেসিডেন্ট সাইদের মন্তব্যে ‘‘গভীর উদ্বেগ’’ প্রকাশ করে আফ্রিকান ইউনিয়ন৷ ওই মন্তব্যের পর সাব-সাহারা আফ্রিকার অসংখ্য নাগরিক নিজের দেশে ফিরে যেতে দূতাবাসগুলোতে ভিড় করছেন৷

টিউনিশিয়ায় অর্থনৈতিক সংকট চরমে৷ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল অর্থাত্ আইএমএফের সঙ্গে আলোচনায় সমস্যা তৈরি হওয়ায় চিন্তার ভাঁজ ইউরোপের দেশগুলিতেও৷

এ বছরের ২০ মার্চ টিউনিশিয়াকে ১৯০ কোটি ডলার ঋণ দিতে আইএমএফের কাছে সুপারিশও করেছে ইটালি৷ কারণ টিউনিশিয়ার সংকটের ফলে সবথেকে বেশি প্রভাব পড়তে পারে ইটালিতে৷ ফলে আরো বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চাপ সামাল দিতে হবে জর্জা মেলোনি সরকারকে৷

আরকেসি/এআই (রয়টার্স,এপি) 

 

অন্যান্য প্রতিবেদন