অভিবাসন, শিল্প এবং মহাকাশে পারস্পরিক ‘‘সহযোগিতার সম্ভাবনা’’ নিয়ে বৈঠক করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি৷
ফরাসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই দেশের দুই শীর্ষ নেতা বৃহস্পতিবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি শীর্ষ সম্মেলনে পরস্পরের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন৷
আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে অভিবাসন ইস্যুটি৷ এ ছাড়াও শিল্পনীতি এবং কার্বন মুক্তকরণ অর্থাৎ ডিকার্বনাইজেশন প্রসঙ্গে ‘‘ইউরোপীয় সার্বভৌমত্বের জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা’’ নিয়েও আলোচনা করেছেন তারা৷
কয়েক দশকের মধ্যে ইটালির অন্যতম কট্টর ডানপন্থি সরকারের প্রধান হিসেবে গত অক্টোবরে দায়িত্ব নেন মেলোনি৷ এর পর ফরাসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এটি তার দ্বিতীয় বৈঠক৷
২০২২ সালের নভেম্বরের একটি ঘটনার জের ধরে অভিবাসন ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যে চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়৷ ২৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে আসা একটি মানবিক জাহাজকে ইটালির উপকূলে ভিড়তে দিকে অস্বীকৃতি জানায় মেলোনি সরকার৷
জাহাজটিকে ফ্রান্সে ডক করার অনুমতি দেওয়া হয়, তবে রোমের ‘‘অগ্রহণযোগ্য’’ আচরণের নিন্দা করতে ছাড়েনি প্যারিস৷ ইটালি থেকে সাড়ে তিন হাজার অভিবাসী গ্রহণের পরিকল্পনাও স্থগিত করে তারা৷
ওই সময়, ফ্রান্সের প্রতিক্রিয়াকে ‘‘আক্রমণাত্মক’’ এবং ‘‘অযৌক্তিক’’ বলেো নিন্দা করেন মেলোনি। আর এ করাণেই অভিবাসন ইস্যুতে দুই দেশের দুই শীর্ষ নেতার এই আলোচনাকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা৷
রুশ আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনকে সমর্থনে দুই দেশই বদ্ধপরিকর৷ এ প্রসঙ্গেও আলোচনা করেছেন তারা৷ ইউক্রেনকে গোলাবারুদ এবং ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার জন্য যে চুক্তিটি হয়েছে, সেটিকেও স্বাগত জানিয়েছেন তারা৷
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কিয়েভকে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ। সম্প্রতি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র ও ট্যাংক সহায়তার ঘোষণা দেয় জার্মানি। এসব ট্যাংক দ্রুত ইউক্রেনে সরবরাহের আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। ওইসময় ম্যাক্রোঁর আমন্ত্রণকে ‘‘অনুপযুক্ত’’ বলে নিন্দা করেছিলেন মেলোনি।
ইটালির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে করেছে, এলিসি প্রাসাদে জেলেনস্কিকে স্বাগত জানানোর সময় মেলোনিকে আমন্ত্রিত না করায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হন ইটালির প্রেসিডেন্ট।
এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় নেতারা ফের অভিবাসন ইস্যুতে কথা বললেন৷ সোমবার ইউক্রেনের সহযোগিতায় দুইশো কোটি ইউরো অনুমোদন করেছেন ইউরোপীয় নেতারা৷ রাশিয়ার আক্রমণ মোকাবিলায় ইউক্রেনে অস্ত্র প্রয়োজন৷ আর এই অর্থ দিয়ে সেই অস্ত্র কেনা সম্ভব হবে৷
রাশিয়ার ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিমান হামলা মোকাবিলায় ইউক্রেনকে একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করবে ফ্রান্স এবং ইটালি। যেটি স্থল থেকে আকাশে উৎক্ষেপণ করা যাবে, তবে তা হবে মাঝারি পাল্লার৷
আরকেসি/টিএম (এএফপি)