উত্তর আফ্রিকার দেশ টিউনিশিয়া সফরে গিয়ে অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে দেশটির ‘‘উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টার’’ প্রশংসা করেছেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
টিউনিশিয়া উপকূলের কিছু অংশ ইটালির দ্বীপ লাম্পেদুসা থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। ফলে টিউনিশিয়া ছাড়াও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের কাছেও ইউরোপে পৌঁছানোর জন্য এই রুটটি বেশ জনপ্রিয়।
টিউনিশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামেল ফেকির সঙ্গে এক বৈঠকে ‘‘টিউনিশিয়ার সামুদ্রিক ও স্থল সীমান্ত রক্ষা, পাচারকারীদের নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে লড়াই এবং তাদের নৌকা বাজেয়াপ্ত করা, সমুদ্রে অভিবাসীদের উদ্ধার করার’’ জন্য দেশটির গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন পিয়ান্তেদোসি৷
টিউনিশিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদের সঙ্গেও দেখা করেন পিয়ান্তেদোসি। প্রেসিডেন্টের দপ্তরের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘কেবল একপাক্ষিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে অভিবাসন সংকটের সমাধান করা যাবে না।’’
যেসব কারণে অনিয়মিত অভিবাসন হয়, সেগুলোর প্রতিকার খোঁজার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট সাইদ। পাশাপাশি, সমাধান খুঁজে বের করতে "যত দ্রুত সম্ভব একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন’’ করার জন্যও বিবৃতিতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন: অনিয়মিত অভিবাসন বন্ধে টিউনিশিয়ার পাশে ইটালি
২১ ফেব্রুয়ারি এক বক্তৃতায় বলেন, ‘‘অবৈধ অভিবাসন টিউনিশিয়ার জনমিতির জন্য হুমকি বয়ে আনছে।’’ তার এমন মন্তব্যের পর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসার ঢল আরো মারাত্মক হয়ে ওঠে।
অভিবাসী সহায়তা গোষ্ঠী টিউনিশিয়ান ফোরাম ফর ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রাইটস এর তথ্য অনুসারে, এ বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জাহাজডুবির ঘটনায় অন্তত ২০০ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।
টিউনিশিয়া উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
এপ্রিলের শুরুতে রোমের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছরের শুরু থেকে ১৪ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ইটালিতে এসেছেন। বছরের প্রথম তিন মাসের পরিসংখ্যান বিবেচনায় ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল চার হাজার ৩০০ জন, ২০২২ সালে ছিল পাঁচ হাজার ৩০০ জন।
আরো পড়ুন: আশ্রয়প্রার্থীদের ইইউর বাইরে রাখার উপায় খুঁজছে জার্মানি
ঋণে জর্জরিত টিউনিশিয়া উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব মোকাবিলা করছে। এর ফলে উন্নত জীবনের তাগিদে অনেকেই ভূমধ্যসাগরের অপর পাড়ে জীবন গড়ার সুযোগ খুঁজছেন।
ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, টিউনিশিয়ার অর্থনৈতিক পতন ইউরোপের উপকূলে অভিবাসীদের ঢল আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
এডিকে/টিএম (এএফপি)