ইউক্রেনের নাগরিক হতে চেয়েছিলেন যশোয়া হায়দার৷ ২০১৯ সালে তাই নিজ দেশ পাকিস্তানের নাগরিকত্ব ছেড়েছিলেন তিনি৷ ভেবেছিলেন, ইউক্রেনে চিকিৎসা নিয়ে পড়াশোনা করছেন যেহেতু, সেখানেই স্থায়ী বসতি গড়বেন৷ অপেক্ষায় ছিলেন, স্ত্রী আর কন্যাকে নিজের কাছে নিয়ে আসার৷
আশ্রয়ের আবেদন করা ব্যক্তিদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে কোন ব্যবস্থা করা যায় কি না সে উপায় খুঁজছে জার্মান সরকার৷ তবে তাদের অধিকার যেন ক্ষু্ণ্ণ না হয় তা দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করছে বার্লিন কর্তৃপক্ষ।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে আশ্রয় দিয়ে আসছে জার্মানি৷ দেশটির অভিবাসন ও শরণার্থী বিষয়ক কেন্দ্রীয় দপ্তর (বিএএমএফ) জানিয়েছে, গেল বছর দুই লাখ ৪৪ হাজার ১৩২টি আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে৷
যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, দক্ষিণ ইংল্যান্ডের পোর্টল্যান্ড বন্দরে একটি ভাসমান বার্জে প্রায় ৫০০ পুরুষ অভিবাসীকে রাখতে চায় তারা।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় দশ লাখ অভিবাসী গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে আশ্রয় আবেদন করেছেন, যা ২০১৬ সালের পরে সর্বোচ্চ৷ সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ আশ্রয় আবেদনের রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশিরাও৷
আশ্রয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই এমন আরো মানুষকে জার্মানি থেকে বিতাড়নের পক্ষে দেশটির সামাজিক গণতন্ত্রী দল এসপিডি নেতা সাসকিয়া এসকেন৷
একজন আফগান নারী এবং তার নাবালিকা সন্তানকে শুধুমাত্র লিঙ্গপরিচয়ের ভিত্তিতে ডেনমার্কে প্রথম আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানে নারীদের পরিস্থিতি কঠিন থেকে কঠিনতম হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই ড্যানিশ শরণার্থী কমিটি (ডিআরসি) একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত বছর রোমানিয়ায় ১২ হাজার ৩০০টিরও বেশি আশ্রয় আবেদন নিবন্ধিত হয়েছে। ইউক্রেনীয়দের পর দেশটিতে সবচেয়ে বেশি আশ্রয় আবেদন করেছেন যথাক্রমে ভারত, বাংলাদেশ, সিরিয়া ও পাকিস্তানের নাগরিকেরা। সর্বমোট এক হাজার ৩৬৪ জন বাংলাদেশি ২০২২ সালে রোমানিয়ার আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
২০২২ সালে আচমকা আশ্রয়ের আবেদন বৃদ্ধির সম্মুখীন হয়েছিল বেলজিয়াম৷ আশ্রয় কাঠামোতে নতুন করে চার হাজার ব্যক্তির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি সত্ত্বেও সংকট কাটেনি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অন্যান্য ইইউ দেশগুলির সঙ্গে আশ্রয়প্রার্থীদের ‘ন্যায্য বণ্টন’ করার আহ্বান জানিয়েছে ব্রাসেলস।
২০২২ সালে জার্মানি ৬৮ হাজারের বেশি অভিবাসীকে ডাবলিন চুক্তির অধীনে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর চেষ্টা করে৷ তবে এর বেশিরভাগই ব্যর্থ হয়৷
সার্বিয়া ভিসা ব্যবস্থায় কড়াকড়ি আরোপের কারণে গোটা বলকান রুটেই অভিবাসনের চিত্রে তার প্রভাব পড়েছে৷ অস্ট্রিয়া জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে এই পথে তাদের সীমান্তে প্রবেশ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে৷
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেঙেন জোনে প্রবেশ করেছে ক্রোয়েশিয়া। ইউরোপে অবাধ চলাচল অঞ্চলে ক্রোয়েশিয়ার এই প্রবেশ বলকান রুটে ব্যাপক পরিবর্তন করতে পারে। পাশাপাশি বসনিয়ায় অপেক্ষমান থাকা অভিবাসীদের জন্য পরিস্থিতি আরো কঠিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।